জাতীয়লিড নিউজ

রাষ্ট্রপতি পদ নিয়ে অবান্তর বিতর্ক অনাকাঙ্ক্ষিত : সিইসি

দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির পদ নিয়ে যে বিতর্ক সামনে আনা হচ্ছে, সেটা অনাকাঙ্ক্ষিত। বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসি এমন মন্তব্য করেন।

সিইসি বলেন, একটি প্রশ্ন ওঠেছে যে প্রার্থীর সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা রয়েছে। এটা সত্য যে দুদক আইনের ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কর্মবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। এটা আছে। এটার আলোকে বিষয়টি বিবেচ্য। এতে করে অনেকেই বলতে চেয়েছেন রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক পদ। আমি সিইসি এবং নির্বাচনি কর্তা হিসেবে ওই আইনটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলাম। কারণ পরীক্ষা করার সময় যেটাকে মনোনয়নপত্র বাছাই বলে, সেটা কিন্তু দায়সারা দায়িত্ব নয়। প্রার্থী যাই বলুক না কেন সিইসিকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে কোনোরুপ সাংবিধানিক বা আইনগত অযোগ্যতা আছে কিনা। আমরা দেখলাম স্পষ্টত কোনো আইনগত অযোগ্যতা নেই।

তিনি বলেন, দুদক আইনের ৯ ধারায় বলেছে কোনো লাভজনক পদে নিয়োগলাভে যোগ্য হবেন না। আমরা কিন্তু এখান থেকে কোনো নিয়োগদান করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগদান করেননি। প্রধান বিচারপতিও নিয়োগদান করেননি। কেউ নিয়োগদান করেননি এবং কেউ নিয়োগদান করতে পারেন না। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা উনাকে নির্বাচিত করেছি প্রচলিত প্রথা অনুসারে এবং নির্বাচন ও নিয়োগের মধ্যে যে পার্থক্য এটা বুঝতে হবে। তাকে যদি এখান থেকে নিয়োগ দেয়া হতো তাহলে অবশ্যই অবৈধ হতো। কারণ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা কর্তৃত্ব আমাদের নেই। কারোরই নেই। যেমন আমাদের জাতীয় সংসদের সদস্যগণ নিয়োগপ্রাপ্ত হন না। তারা নির্বাচিত হন, সেটাই তাদের নিয়োগের সমতুল্য।

 

তিনি আরো বলেন, এই বিষয়টি কিন্তু ১৯৯৬ সালে একটি মামলা হয়েছিল যখন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। অফিস গ্রহণের পূর্বেই জনাব আবু বকর সিদ্দিক ভার্সেস অবসর প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন মামলা হয়েছিল। সেই রিট মামলায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মামলায় যে অপারেটিভ পোর্শন সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো অবৈধ্যতা হয়নি। আলোচনায় তিনি (আদালত) বলেছেন এই পদটি অফিস অব প্রোফিট হলেও তিনি প্রজতন্ত্রের কর্মচারি নন। সেখানে কোন পদগুলো লাভজনক এবং কোন পদগুলো সাংবিধানিক পদ, সেগুলো আলাদা করে দেখানো হয়েছিল।

আমরা সেই প্রশ্নে না গিয়ে যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের চুড়ান্ত একটি রায় বলে দিয়েছে যে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি, ঠিক তেমনি অবসরপ্রাপ্ত কমিশানের নিয়ম। তাই রাষ্ট্রপতি পদে অনুরুপভাবেই (সাবেক দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন) অবৈধ নয়। সেই দিক থেকে এই প্রশ্নে বিভ্রান্তির সৃষ্টি বিভিন্ন ধরণের মতামত দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি অনাবশ্যক বা সমীচিন হবে না বলে আমি মনে করি।

 

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাকে দেখতে হবে আইনের কোথায় কী বলেছে। এটা হচ্ছে সংবিধিবদ্ধ একটি অযোগ্যতা যে কর্মাবসানের পদে তিনি কোনো পদে নিয়োগলাভ করবেন না। নির্বাচন ও নিয়োগ এক জিনিস নয়। একটি মানুষ যখন নির্বাচিত হন তার চরিত্র একটি আর যখন নিয়োগপ্রাপ্ত হন তখন চরিত্র আরেকটি। উনি নির্বাচিত হয়েছেন পরোক্ষভাবে পুরো দেশবাসীর পক্ষে, আর প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় সংসদের সদস্যদের দ্বারা। যেহেতু একজন মাত্র প্রার্থী ছিলেন এবং দু’টো মনোনয়নপত্র ছিল। আমি নির্বাচনি কর্তা হিসেবে বিবেচনা করেছি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং এর বাইরেও প্রচলিত যে আইন কানুন সংবিধানের ৬৬ ও ১৪৭ অনুচ্ছেদ এবং সেই রায় বিবেচনায় করে দেখেছি এই পদে তার নির্বাচনে কোনো ধরণের অযোগ্যতা নেই। কাজেই সেই জিনিসটা আমি আপনাদের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করতে চাচ্ছি যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি কোনো ধরণের অবান্তর বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়, সেটা হবে অনাকাঙ্খিত।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button