জীবনযাত্রালিড নিউজস্বাস্থ্য

যেসব কারণে রোগাক্রান্ত হতে পারে কিডনি

যেসব কারণে রোগাক্রান্ত হতে পারে কিডনি

হৃৎপিণ্ড বন্ধ হলে ৫ মিনিটের ভেতর মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ঠিক তেমনি কিডনিকে বাদ দিলে, সাত থেকে ১৪ দিনের ভেতর মানুষের জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারে। মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ নিয়ে লিখেছেন অধ্যাপক ডা. হারুন-আর-রশিদ, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, কিডনি ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ

মানুষের অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে কিডনি একটি। মানবদেহে মোট দুটি কিডনি থাকে, আকৃতিতে অনেকটা শিমের বিচির মতো। শরীরে নাভি বরাবর পেছনের দিকে মেরুদণ্ডের দুই পাশে কিডনির অবস্থান। বিভিন্ন কারণে রোগাক্রান্ত হতে পারে কিডনি।

কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য রক্তের ক্রিয়েটিনিন নামক জৈব পদার্থ পরিমাপ করা হয়, যার মাধ্যমে কিডনি কতটুকু কাজ করছে তা বোঝা যায়। যদি এই ক্রিয়েটিনিন পুরুষের ক্ষেত্রে ১.৪ মিলিগ্রামের ওপরে তিন মাস বা ততোধিক স্থায়ী থাকে তখন তাকে কিডনি রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

কিডনি রোগের ধরন

দুই ধরনের কিডনি রোগ হয়ে থাকে। এর একটি হচ্ছে আকস্মিক কিডনি বিকল আর অন্যটি হচ্ছে ধীরগতিতে কিডনি বিকল।

আকস্মিক কিডনি বিকল

যদি হঠাৎ করে কয়েক ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েক দিনের ভেতরে কিডনির কার্যকারিতা দ্রুত লোপ পেতে থাকে তখন আমরা আকস্মিক বা অ্যাকিউট কিডনি বিকল বলে থাকি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর প্রস্রাব কমে যায় এবং ক্রমান্বয়ে কিডনি দ্বারা প্রস্রাব তৈরি না-ও হতে পারে।

প্রধান কারণ-

* অতিরিক্ত ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা

* অতিরিক্ত বমি

* শরীরে রক্তক্ষরণ

* প্রসাবকালীন জটিলতা

* ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার

* অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার

আকস্মিক কিডনি বিকল হলে রক্তের ক্রিয়েটিনিন দ্রুত বেড়ে যায়, প্রস্রাবের মাত্রা কমে যায় এবং প্রস্রাব দ্রুত বন্ধ হয়ে যায় এবং রক্তচাপও কমে যায়। সুতরাং দ্রুত চিকিৎসা না করালে কিডনি অকেজো হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে। সঠিকভাবে চিকিৎসা দিলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।

ধীরগতিতে কিডনি বিকল

যদি কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে লোপ পায় এবং তা তিন মাসের বেশি স্থায়ী থাকে তখন তাকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বলে।

প্রধান কারণ

* নেফ্রাইটিস জাতীয় কিডনি রোগ (৪০%)

* ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ (৩৫%)

* উচ্চ রক্তচাপজনিত কিডনি রোগ (২০%)

* পাথরজনিত কিডনি রোগ (৩-৪%)

* অন্যান্য কিডনি রোগ

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের সাধারণত কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। শুধু রোগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে অতীতে তার নেফ্রাইটিস, বর্তমানে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে কি না তা যাচাই করে এবং প্রস্রাব পরীক্ষা করে দেখা হয়। শুধু মাল্টিস্টিকিস দ্বারা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ ধরা যেতে পারে এবং তা চিকিৎসা শুরু করা যেতে পারে।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button