পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি ইন্টারপোলের রেড নোটিশভুক্ত রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে আছেন না পালিয়ে অন্য দেশে চলে গেছেন তার সঠিক তথ্য নেই বাংলাদেশ পুলিশের কাছে। দুবাই পুলিশ তাঁকে নজরদারির মধ্যে রেখেছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে বলা হয়েছে।
আরাভ বর্তমানে দুবাইয়ে আছেন বলে গতকালও বাংলাদেশ পুলিশের কাছে তথ্য আছে বলে জানায় পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র। আরাভের সঠিক অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে। তবে ইন্টারপোল বাংলাদেশ পুলিশকে জানিয়েছে, দুবাইয়ে তিনি নজরদারিতে আছেন। তাঁকে আটক করে দেশে আনা হবে, এ নিয়ে এখনো সঠিক তথ্য জানতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এদিকে, আরাভ খান তার নিজের ফেসবুক আইডিতে সর্বশেষ পোস্ট দিয়েছেন ২১ মার্চ। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় দেশবাসী, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন সহায় হন।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গত শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দুবাইয়ে আরাভ আটক হয়েছে কি না, সেই তথ্য নেই আমাদের কাছে। তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। আমরা তাদের (ইন্টারপোল) সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তার সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখছি।’
মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল আরাভের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ গ্রহণ করার পরের দিন গত সোমবার রাতে তাঁকে ‘সেফ হোমে’ নেওয়া হয়। এর পর থেকে মূলত তিনি নিজের ফ্ল্যাটেই নজরদারিতে আছেন। তাই এক ধরনের আটক অবস্থায় থাকায় সেখান থেকে তাঁর পালানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি দুবাই কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও দেশটির এনসিবি সদস্যদের সঙ্গে ঢাকার পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। এখন দুবাই ও বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তি, নিয়ম-কানুনের আলোকে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানা গেছে।
আরাভ এখনো ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন জানিয়ে ওই সূত্র জানায়, দুবাইয়ে স্থায়ী বসবাসের জন্য কার্ডেও তিনি আরাভ খান হিসেবে পরিচিত। দেশি-বিদেশি মিডিয়ায়ও আরাভ খানের নামটি উঠে এসেছে। আবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আরাভের পাসপোর্ট বাতিল করেছে—এমন খবর এখনো পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি যদি পালিয়ে অন্য দেশে চলে যান, তাহলে তাঁকে কিভাবে আটক করা হবে এই নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
জানতে চাইলে ডিবি সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। আরাভ যে বাংলাদেশের নাগরিক, সেই তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে ভারতের কাছে চিঠি দেওয়ারও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢাকায় ভারতের দূতাবাসে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের (এনসিবি) সূত্র বলছে, দুবাই কর্তৃপক্ষ আরাভকে আটকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে ঢাকার পুলিশ তাঁকে দুবাই থেকে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এরই মধ্যে ডিবি ও এনসিবির চার-পাঁচ সদস্যের নাম দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তবে গতকাল পর্যন্ত তাঁদের দুবাই যাওয়ার সরকারি আদেশ (জিও) হয়নি বলে জানা গেছে।