আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধী তালিকায় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা শামিন মাহফুজ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক জব্দ করা হয়।
সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ডিএমপি জানিয়েছে, শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ড স্ট্যান্ড করা শামিন মাহফুজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দিয়ে চালিয়ে যান ২০১১ সাল পর্যন্ত।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুমি সম্প্রদায় নিয়ে পিএইচডি গবেষণা করতে তিনি বসবাস শুরু করেন পাহাড়ে। এসময়ই জড়িয়ে যান জঙ্গি কার্যক্রমে। সংগ্রহ করতে থাকেন সদস্য। এক পর্যায়ে গড়ে তোলেন নতুন জঙ্গি সংগঠন, ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’।
জঙ্গিবাদে জড়ানোর কারণে শামিন মাহফুজ দুবার গ্রেপ্তার হন। সবশেষ ২০১৪ সালে তিনি ধরা পড়েন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ২০১৭ সালে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
শিক্ষক হওয়ায় উগ্রপন্থিরা ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করে শামিনকে। শামিনের বিরুদ্ধে বান্দরবানের থানচি ও যাত্রাবাড়ী থানায় পাঁচটি মামলা থাকার তথ্য মিলেছে। পাহাড়ে প্রশিক্ষণ, ভারী অস্ত্র সংগ্রহসহ জঙ্গি সংগঠনের মূল সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন তিনি।
অনেক তরুণকে ‘হিজরত’র নামে ঘরছাড়া করে পাহাড়ে নিয়ে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করার কারিগর এই শামিন মাহফুজ। পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কমান্ডার নাথান বম তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু। এই সুবাদে কেএনএফের সঙ্গে জামাতুল আনসারের যোগসূত্র হয়। এমনকি শামিন অর্থ দিয়ে জামাতুল আনসারের সদস্য তরুণদের কেএনএফের কাছে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্যও পাঠান।
অবশ্য পাহাড়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে। ফলে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।