এক্সক্লুসিভ স্বাস্থ্য বুলেটিন

যেসব খাবার খেলে বৃদ্ধি পাবে স্মৃতিশক্তি

শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা সকলেরই কাম্য। যারা শারীরিকভাবে সুস্থ ও সবল তাদের কাজকর্ম, চলাফেলা, পড়াশুনা ইত্যাদি দৈনন্দিন বিষয়গুলো খুব স্বাভাবিক গতিতেই চলে। পুষ্টির অভাব থাকলে দেহে শক্তির পরিমাণ কম থাকে।

আর এই পুষ্টি যোগান দিয়ে থাকে খাদ্য। বর্তমান যুগে দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যই অনেক বেশি কার্যকর বলে পুষ্টিবিদরা মনে করছেন।শারীরিকভাবে সুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ থাকাও অনেক জরুরী। মানসিক চাপ,উদ্বেগ,স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপে ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছুটা সংযোজন বিয়োজন করলে আপনার বুদ্ধি খুলবে এবং স্মৃতিশক্তিও আগের চেয়ে বাড়বে।

জামের মিল্ক শেক: দুধের উপকারিতার কথা আমাদের বলার অপেক্ষা রাখে না। দুধের সাথে জাম মিশিয়ে মিল্ক শেক বানিয়ে খেলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। জাম ব্লাড প্রেসারের পরিমাণ ঠিক রাখে শরীরে। সেই সাথে কোলেস্টোরেলের পরিমাণ কমায়। এতে করে মস্তিষ্ক ভালো থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

ডালিমের রস: ডালিমে প্রচুর পরমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ডালিম খেলে ব্লাড সার্কুলেশন স্বাভাবিক থাকে যা মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে। দুপুরে খাবারের আগে বা পরে  ডালিমের শরবত খেলে মস্কিষ্ক সুস্থও স্বাভাবিক থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

বিটরুট: বিটরুটকে বলা হয় পুষ্টির অন্যতম উৎস। খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ফাইবার সবকিছুই রয়েছে বিটরুটে।বিটুরট স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিটরুট নাইট্রিক এসিডের অন্যতম একটি উৎস যা মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এতে করে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

গ্রিন টি: গ্রিন টি শুধুমাত্র ওজন কমাতে সাহায্যই করে না স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মস্তিষ্কে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এই উপাদানটির উপস্থিতি নিউরোট্রান্সমিটারের ক্রিয়াকলাপ বাড়াতে সাহায্য করে এতে করে উদ্বেগ, অতিরিক্ত মেজাজ কমে। সেই সাথে স্মৃতিশক্তিও বাড়ে।

ডার্ক চকলেট: এই চকলেটে ৭০ শতাংশ কোকোয়া থাকে। এটা ধমনীর কার্যকারিতা উন্নত করে মস্তিষ্ক ও স্মৃতিশক্তির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কফি: অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ইন্সবার্ক’য়ের গবেষকরা মানুষদেরকে দুকাপ কফির সমতুল্য ক্যাফেইন দিয়ে দেখেছেন যে, যারা এই পরিমাণ ক্যাফেইন গ্রহণ করে না তাদের চাইতে এটা স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং নিউরন মস্তিষ্কে সংকেত পাঠাতে সহায়তা করে।এছাড়া ফরাসি গবেষণায় দেখা গেছে ষাটোর্ধ মহিলারা যারা দিনে তিন কাপ বা এর বেশি কফি খায় তারা অন্যদের অর্থাৎ যারা কফি কম খায় বা খায় না তাদের তুলনায় বেশি শব্দ মনে রাখতে পারেন।

বাদাম: আমেরিকান জার্নাল অব এপিডেমিয়োলজি’তে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায় ভিটামিন ই স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া কমাতে সাহায্য করে, বিশেষত বৃদ্ধ বয়সে। বাদাম যেমন- কাঠবাদাম ও আখরোট ভিটামিন ই’য়ের ভালো উৎস। তাই বিকালের নাস্তার একটি অংশ হিসেবে বাদামকে বেছে নিতে পারেন।

তৈলাক্ত মাছ: মানব শরীরে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে না। তাই খাবারের মাধ্যমে তা গ্রহণ করতে হয়। তৈলাক্ত মাছ যেমন- স্যামন, সারডিন-সহ মিঠাপানি ও সামদ্রিক মাছ থেকে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করতে পারেন।

ব্রকলি: এই সবজি ভিটামিন কে’তে ভরপুর। গবেষকরা দেখেছেন, ব্রকলি গ্লুকোসিনোলেটস’য়ের ভালো উৎস যা নিউরোট্রান্সমিটার, অ্যাসেটাইলকোলাইন ভেঙে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে, যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে সঠিক কার্যকারিতা পরিচালনা করতে ও আমাদের স্মৃতি তীক্ষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।

স্ট্রবেরি: ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী সপ্তাহে অন্তত এক কাপ স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি খান তাদের মানসিক পতন যারা খান না তাদের তুলনায় আড়াই বছর ধীর হয়।

টমেটো: কয়েকটি গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, টমেটোতে লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা কোষের রেডিকল ক্ষয়ের বিরুদ্ধে কাজ করে। ফলে স্মৃতিভ্রংশ বা স্মৃতির অবক্ষয় হ্রাস পায়। তাই প্রতিদিন সালাদে হিসেবে টমেটো খান।

কুমড়ার বীজ: অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে, এক মুঠ কুমড়ার বীজের জিংক স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও কুমাড়ার বীজ থেকে বোনাস হিসেবে ভিটামিন বি ও ট্রিপ্টোফেন পাওয়া যায়।

ডিম: ডিমের কুসুম কোলিন নামক অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা কোষে সংকেত পৌঁছাতে সাহায্য করে। আর ‘শর্ট-টার্ম মেমোরি’ স্বল্প সময়ের স্মৃতি উন্নয়নে সাহায্য করে।

পালংশাক: পাতাবহুল এই সবজি নানানভাবে উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, এর ভিটামিন ই মস্তিষ্কে বয়সের প্রভাব ও স্মৃতিভ্রংশ কমাতে বা দূর করতে সাহায্য করে।এক কাপ পালংশাকে দৈনিক চাহিদার ১৫ শতাংশ ভিটামিন ই থাকে। এবং রান্না করা আধা কাপ পালংশাকে দৈনিক চাহিদার ২৫ শতাংশ ভিটামিন ই থাকে।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button