খেলাধুলা

ফিটনেস নিয়ে কথা উঠুক চান না আল-আমিন

ফোনের ও প্রান্ত থেকে ভেসে এল আল-আমিন হোসেনের হাসির শব্দ। ৩১ বছর বয়সী পেসারের মুখে উপচে পড়া হাসির কারণ একটু আগেই ফিটনেস টেস্টে ‘ফার্স্ট’ হয়েছেন। লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই পেসার গতকাল রোববার জাতীয় লিগ সামনে রেখে দেওয়া ফিটনেস পরীক্ষায় ২১.২ স্কোর তুলে পেছনে ফেলেছেন বাকি সবাইকে।

গত মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে দলের সঙ্গে নিয়ে গেলেও একটা ম্যাচও খেলা হয়নি আল আমিনের। পরে আরও বড় দুঃসংবাদ! নিউজিল্যান্ড থেকে ফেরার পর হঠাৎ দল বাদ এই পেসার। এরপর আর ফেরা হয়নি দলে। অবশ্য এই সময়ে চোটও ভুগিয়েছে টি–টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ সফল এই পেসার।

হতাশায় মোড়ানো সময়গুলোকে হেলায় কাটাননি ৩১ বছর বয়সী এই পেসার। টানা সময় কাটিয়েছেন জিম থেকে সুইমিংপুলে। ত্বক পোড়া রোদ উপেক্ষা করে দৌড়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দারুণ ফিটনেসের পেছনে এই রহস্যই ছিল মূল কারণ।

আল-আমিন বললেন, ‘অনেক দিন তো খেলার বাইরে। ৪–৫ মাসের মতো বাইরে আছি। তবে সব সময় ফিটনেস নিয়ে কাজ করে গেছি।’

ফিটনেস ভালো রাখতে কী কী কাজ করেছেন, আল-আমিন ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘যখন পায়ে চোট ছিল তখন ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে পারিনি। যখনই সুযোগ পেয়েছি জিমে গিয়েছি, দৌড়েছি, সাঁতার কেটেছি। পেসারদের চোটে পড়ার প্রবণতা বেশি। ফিটনেসে নিয়মিত কাজ না করলে তাই সমস্যা। সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্তত আমি ফিটনেস নিয়ে কাজ করে গেছি। এখানে কোনো বিরতি দেওয়ার সুযোগ নেই। ছাড় দেওয়ারও সুযোগ নেই।’

শুধু এবার নয়, ফিটনেস টেস্টে ধারাবাহিক সাফল্য দেখাচ্ছেন আল-আমিন। ফিটনেস নিয়ে কঠোর পরিশ্রম নিয়ে বলেছেন, ‘আমি চাই না আমার ফিটনেস নিয়ে কথা উঠুক। পারফরম্যান্স আমার হাতে নেই। সেটি কখনো ভালো হবে, কখনো খারাপ। তবে ফিটনেস আর ফিল্ডিংটা নিজের হাতে। আমি এই দুটো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

গতকাল আল-আমিন যখন জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) খেলতে ফিটনেস টেস্ট দিচ্ছেন, তখন তাসকিন আহমেদ–শরীফুল ইসলামেরা প্রস্তুত হচ্ছেন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রওনা দিতে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আল-আমিন ছিলেন দলে। পাঁচ বছর পর আরেকটা বিশ্বকাপে নেই।

টি–টোয়েন্টিতে আল-আমিনের রেকর্ড-পরিসংখ্যান মলিন বলার সুযোগ নেই। ঘরের মাঠে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা এই পেসারের দারুণ পারফরম্যান্সের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে থাকবে। ওই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১০ উইকেট ছিল তাঁরই। ২০১৬ এশিয়া কাপেও আলো ছড়িয়েছেন এই অভিজ্ঞ পেসার।

আল-আমিন সর্বশেষ খেলেছেন গত বছরের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেই টি–টোয়েন্টিতে দলের সেরা বোলার ছিলেন এই পেসার। সব মিলিয়ে ৩১ টি–টোয়েন্টিতে আল আমিনের শিকার ৪৩ উইকেট। ইকোনমি রেট টি–টোয়েন্টি বিবেচনায় সমীহ করার মতোই—৭.১৩।

বিশ্বকাপের দলে না থাকায় আল-আমিনের আফসোস হওয়ারই কথা। বললেন, ‘বিশ্বকাপ খেলতে না পারা অবশ্যই কষ্টের। হয়তো বিশ্বকাপ আমার ভাগ্যে ছিল না।’

এখন জাতীয় দলে ফেরাটা যে কঠিন হবে বুঝতেই পারছেন আল-আমিনের। হতাশ না হয়ে নিজের সবটা ঢেলে দিচ্ছেন ফিটনেসের উন্নতিতে। সেই রসদ নিয়ে ভালো করতে চান ঘরোয়া ক্রিকেটে। সেই ভালো করার প্রথম পরীক্ষা ১৭ অক্টোবর শুরু জাতীয় ক্রিকেট লিগ।

আল-আমিন বললেন, ‘সামনে অনেক সুযোগ আছে। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান আসছে। টানা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০২২ সালে আরেকটা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আশা না হারিয়ে নিজেকে প্রস্তুত রাখছি। যখন সুযোগ আসবে, যেন শতভাগ দিতে পারি।’

 

 

এমন আরও সংবাদ

Back to top button