নাসরিন সরমিন: আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে আমি আর আমার বর মিলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গিয়ে ছিলাম। সমুদ্র বলে কথা সেখানে গিয়েই মন আনন্দে ভরে গেল।সাতদিনের জন্য হোটেল বুক করলাম।কমপক্ষে এক সপ্তাহ না থাকলে মন ভরবে না।দু’জন মিলে হোটেলে থাকি ।থাকার হোটেলের উপরেই খাওয়ার হোটেল আছে।সকালে ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা করে চলে যেতাম সমুদ্র সৈকতে। সমুদ্রে নেমে গোসল করার মজাই আলাদা। যে কয়দিন সমুদ্রে গোসল করেছি আরেকটি ব্যপার লক্ষ্য করেছি— বি, বি, এ, পড়ে আটজন বন্ধু তারাও ঢাকা থেকে এসেছে সমুদ্র দেখতে। সাগরে নেমে গোসল করে আর বল খেলে । যখনই আমি আর আমার বর মিলে সাগর পাড়ে আসি তখনই তাদের দেখতে পাওয়া যায় সাগরের ভিতর বল খেলছে।তাদের সাথে পরিচয় হয়। এখানে সপিং করার মত অনেক কিছুই আছে। বার্মিজ জিনিস প্রচুর পাওয়া যায়।শামুক, ঝিনুকের গহনার সেট পাওয়া যায়।আরও অনেক আন কমন জিনিস পাওয়া যায়।সানগ্লাস, কেপ সেখানে প্রায় সবাই কিনে।আচার তো কিনবেই কিনবে।আমিও কিছু কিছু সপিং করলাম।বাকীগুলো যাওয়ার আগের দিন কিনবো। তিনদিনের দিন সকালে নাস্তা খেয়ে বরকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম সমুদ্রে লাফাতে।আমরা দু’জন এবং প্রতিদিনের মত আট বন্ধু মিলে গোসল করছে।তখন সাগরে চলছে ভরা জোয়ার।হঠাৎ আমার বর খেয়াল করলেন সামনে লাল পতাকা উড়ছে।তার মানে ভাটার সিগন্যাল।আমার বর আমাকে একটানে সমুদ্রের পাড়ে নিয়ে এসেছে।আট বন্ধুর মাঝে তিনজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।সমুদ্রের মাঝে বিপদে পড়লে সেখানে একদল লাইফ গার্ড আছেন বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্য।লাইফ গার্ড তিনজনের মধ্যে দু’জনকে সমুদ্রের গভীর জল থেকে তুলে এনেছে।আর একজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।অনেক চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি।তার নাম সৈকত।পরদিন সৈকতের নিষ্প্রাণ দেহ পাওয়া গেছে মহেশখালি দ্বীপে।মায়ের বুক খালি করে সমুদ্রের বুকে মিশে আছে সৈকতের প্রাণ।সাতদিন আমাদের আর সমুদ্র সৈকতে থাকা হলো না। একবুক যন্ত্রণা নিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বাড়ির দিকে রওনা করলাম।
এস.এ