বেশি দামে ডলার কিনছে ব্যাংক
এক্সক্লুসিভ নিউজ, ঢাকা : ডলারের সরবরাহ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে চড়া দরে রেমিট্যান্স কিনতে হচ্ছে। কিন্তু ডলারের দর যখন স্থিতিশীল ও এখনকার চেয়ে কম ছিল, তখনকার আমদানি দায় শোধ করতে হচ্ছে এই দামি ডলার দিয়ে। এভাবে আমদানির ঋণপত্র নিষ্পত্তিতে বাধ্য ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার কিনে কম দামে বিক্রি করে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) কারিগরি কমিটির প্রধান ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের হেড অব ট্রেজারি অসীম কুমার সাহা বলেন, বিদেশে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ডলারের চাহিদা বেশি থাকায় ব্যাংকগুলো ফরেন এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো থেকে ১১০-১১১ টাকা দরে ডলার ক্রয় করে তা আমদানিকারকদের কাছে ১০২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করছে। আর রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে ডলার কিনছে ১০২ টাকা থেকে ১০৩ টাকা দরে। এতে কিছুটা সমন্বয় করা সম্ভব হলেও রপ্তানি আয় আমদানি ব্যয়ের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় ক্ষতির মুখে ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী ডলারের দাম বেশি। তাই বিদেশি হাউসগুলো থেকে বেশি দামে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে। কিন্তু দেশের স্বার্থে ক্রয় দামের তুলনায় লস দিয়ে কম দামে আমদানি বিল পরিশোধ করছে ব্যাংক।
অসীম কুমার জানান, এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও নিত্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে আমদানি বিল পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ৯৫ টাকা দরে কয়েকটি সরকারি ব্যাংকের কাছে কিছু ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা মোট আমদানি দায়ের তুলনায় একেবারে নগণ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে বাফেদার কারিগরি কমিটি অভিন্ন দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে কাজ করে যাচ্ছে। এর জন্য আরও তিন-চার মাস লাগবে। তত দিনে ডলারের চাহিদা সহনীয় পর্যায়ে আসতে পারে।
বাজারে সরবরাহ বাড়াতে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে চলতি অর্থবছরে ২০৮ কোটির বেশি ডলার বিক্রি হয়েছে। আর গত অর্থবছরে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বাজারে বিক্রি করা হয়। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ হাজার ৯৩৬ কোটি ডলারে নেমেছে।
আগস্টের ২৫ দিনে আমদানির জন্য ৩৩৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। এ সময় ৪৪৩ কোটি ৯৮ লাখ ডলারের এলসি নিষ্পত্তি বা আমদানি দায় শোধ হয়েছে। জুলাইতে এলসি খোলা হয় ৫৫৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের; নিষ্পত্তি হয় ৬৫৮ কোটি ৭ লাখ ডলারের। গত অর্থবছর মোট আমদানি ব্যয় ছিল ৮ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। একই সময়ে রপ্তানি আয় এসেছে ৪ হাজার ৯২৫ কোটি ডলার। আবার রেমিট্যান্স ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলারে নেমেছে।