রেমিট্যান্সে ‘ভাটা’ ঠেকাতে ডলারের দর গেল ব্যাংকের হাতেই
এক্সক্লুসিভ নিউজ, ঢাকা : ডলারের দামের বেঁধে দেওয়া সীমা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকগুলো তাদের মতো করে ডলারের রেট নির্ধারণ করবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি তদারকি করবে। প্রবাসী আয় বাড়াতে এই সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে এ তথ্য জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বাফেদা, ‘এবিবি ডলারের একটা রেট দিয়েছিল ওটা ধরেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাম বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ব্যাংগুলো বেঁধে দেওয়া রেট দিয়ে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে পারছে না। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে, তোমরা কত রেট দিয়ে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করবে তা তোমরাই নির্ধারণ করো দেখো এতে উপকার হয় কি না। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো প্রতিযোগিতামূলক দর নির্ধারণ করবে; কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়টি তদারকি করবে। আজ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।’
এর আগে ডলারের বাজারে অস্থিরতা কাটাতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলার ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। তবে ব্যাংকগুলো আন্তব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া রেট মানেনি বেশিরভাগ ব্যাংক। ইচ্ছেমতো আমদানিকারকদের কাছ থেকে ডলারের মূল্য নিয়েছে ব্যাংকগুলো। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের বাজার ঠিক করতে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে দাম নির্ধারণের বিষয়টি ব্যাংকগুলোর কাছে ছেড়ে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অস্থির ডলারের বাজার নিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, চালের বাজারের মতো ডলারের বাজারেও সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হয়েছে। হঠাৎ করেই দেখা যাচ্ছে এক ডলারের দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতি মুনাফার জন্য এই কাজ করছে ব্যাংকগুলো। এজন্য আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বলেছি ডলারের বিষয়ে আপনারা যেটা ভালো মনে করবেন সেটাই করবেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম বেঁধে দেওয়ার পর রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যায়। যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে আসে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে দেশে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ১২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার কম। এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১ কোটি ৮ লাখ ডলার। এছাড়া আগের বছরের মে মাসের তুলনায়ও এই মে মাসে ২৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার কম এসেছে। গত বছর মে মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।