রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে সোনার দামে পতন
সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে আবার পতনের দিকে হাঁটছে। গতকাল বুধবার সোনার দাম প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ১১ মিনিটে (গ্রিনউইচ সময় ১৯টা ১১ মিনিট) স্পট গোল্ডের দাম শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৩৬৫৮.২৫ ডলারে নেমে আসে। এর আগে তা রেকর্ড ৩৭০৭.৪০ ডলারে পৌঁছেছিল। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে।
ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য মার্কিন গোল্ড ফিউচারসের দাম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ৩৭১৭.৮ ডলারে স্থির হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার এক-চতুর্থাংশ কমিয়েছে এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা বছরের বাকি সময় ধরে ধীরে ধীরে ঋণের খরচ কমিয়ে আনবে। একই সঙ্গে, সুদের হারের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ফেডারেল রিজার্ভ পরিস্থিতি অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগোনোর অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পাওয়েল।
মেটাল ব্যবসায়ী তাই ওয়ং বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার একটি অংশ হিসেবে দেখছে। এই মন্তব্যের ফলে একধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিতে শুরু করেছে, যা বেশ স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, ‘সোনার দামের কিছুটা পতন বা অন্তত কিছুটা স্থিতিশীল হওয়া বাজারের জন্য ভালো। অস্বাভাবিক দরপতন আমি আশা করি না। যদি দাম ৩ হাজার ৫৫০ ডলারের নিচে না নামে, তবে স্বল্প মেয়াদের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকবে।’
২০২৪ সালে তিনবার সুদের হার কমানোর পর গত ডিসেম্বরে নীতিগত পরিবর্তন স্থগিত রেখেছিল ফেডারেল রিজার্ভ। এ বছরের মধ্যে এই প্রথম তারা আবার সুদের হার কমাল।
যখন সুদের হার কমে, তখন সোনা কেনার পরিমাণ বাড়ে। কারণ, সুদের হার কমলে কোনো আয় না-আনা এই সম্পদ ধরে রাখার সুযোগ ব্যয় কমে যায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ বছর সোনার রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারাবাহিকভাবে কেনা, বিনিয়োগকারীদের মার্কিন ডলারের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য সম্পদের দিকে ঝুঁকে পড়া, বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সংঘাতের কারণে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার চাহিদা এবং সামগ্রিকভাবে ডলারের দুর্বলতা। অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে সুরক্ষা হিসেবে বিবেচিত এই মূল্যবান ধাতু এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।
ডয়েচে ব্যাংক আগামী বছরের জন্য সোনার মূল্য পূর্বাভাস বাড়িয়ে আউন্সপ্রতি গড় ৪ হাজার ডলার করেছে, যা এর আগের পূর্বাভাস ৩ হাজার ৭০০ ডলারের চেয়ে বেশি।
এদিকে, স্পট সিলভারের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৪১.৫১ ডলারে নেমেছে, প্লাটিনামের দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬০ ডলারে এবং প্যালাডিয়ামের দাম ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ১১৪৫.৪৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে।