এক্সক্লুসিভ নিউজজাতীয়জীবনযাত্রালিড নিউজ

নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী

নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগদান শেষে ওয়াশিংটনের ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মহ: শহীদুল ইসলাম তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান : ছবি পিআইডি

এক্সক্লুসিভ নিউজ : ওয়াশিংটন ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন ও উচ্চ পর্যায়ের পার্শ্ব-আলোচনায় যোগদান শেষে তার সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর সমাপ্ত করে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

বিমানটি স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩ মিনিটে ওয়াশিংটন ডিসির ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে দুই দিনের যাত্রা বিরতির পর ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে পৌঁছান।

নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলায় ভাষণ দেন।

১৯ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থানকালে তিনি বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের ও রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেন এবং বিভিন্ন সরকার, রাষ্ট্র ও সংগঠনের প্রধানের সঙ্গে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন।

প্রধানমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সম্মানে জাতিসংঘ সদর দফতরের নর্থ লনের ইউএন গার্ডেনে একটি চারাগাছ রোপন করেন। সফর শেষে ১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।

যে কারণে নিজেদের বিমানে নিউইয়র্ক সফর, জানালেন প্রধানমন্ত্রী : কেন নিউইয়র্ক সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টার্ড ফ্লাইট ব্যবহার করছেন- তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ড্রিমলাইনার, সেটা নিয়েই আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। কেন এসেছি? দুটো কারণ। একটা হচ্ছে যে আমি যদি এই করোনার সময় অন্য এয়ারলাইন্সের টিকিট করি, তাহলে তাদেরকে টাকা দিতে হয়। আর আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক রুটগুলো করোনার কারণে বন্ধ ছিল। আমাদের বিমানগুলো বসেই ছিল। আর একটা বিমান বসে থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণে একটা বিরাট টাকা খরচ হয়।

‘সেজন্যই আমি বললাম, আমরা অন্য এয়ারলাইন্সকে টাকা না দিয়ে আমাদের বিমান নিয়ে আসব। কারণ ওরা তো দেশে বসে আছে। কাজেই আমাদের সঙ্গে আসলো আর ঘরের টাকা ঘরেই থাকল, বিমানই পেল।’

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে নিউইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালুর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য যে নিউইয়র্কে অন্তত আমাদের নিজেদের বিমান আসবে। সেটাও আমরা আনতে চাই। জেএফকেতে (জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) ল্যান্ডিং করার প্র্যাকটিসটাও হয়ে গেল। ভবিষ্যতে তো আসব। কাজেই তার প্র্যাকটিসটা এখানে থেকেই করে গেলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে বিমানের সীমাহীন দুর্নীতি ছিল। এই পর্যন্ত প্রায় ১১টা বিমান আমরা ক্রয় করেছি, আজকে আমাদের ২১টা বিমান।

শেখ হাসিনা বলেছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্রিমলাইনারের বিজি-১৯০১ ফ্লাইটে করে দুটি কারণে নিউইয়র্কে এসেছি। প্রথম কারণ হচ্ছে- অন্য এয়ারলাইন্সের পরিবর্তে দেশি এয়ারলাইন্সকে অর্থ দেওয়া, এতে আমাদের অর্থ আমাদের হাতেই থেকে যায়। দ্বিতীয়ত হলো-প্লেন উড্ডয়ন না করলেও প্রতিদিন একটি বিরাট অংকের টাকা খরচ হয়। এমনিতেই করোনাভাইরাসের কারণে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো স্থগিত রয়েছে। তাই নিজেদের প্লেনে এসেছি।

শুক্রবার নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া এয়ারপোর্টের ম্যারিয়ট হোটেলে আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তার সরকার ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালুর একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুনলাম, কেউ কেউ বলেছে, আমি নাকি কত বস্তা, না কত ট্রাঙ্ক বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে নাকি বিমানে এসেছি। যারা এই কথাগুলো বলেছে, তারা যখন এই বিষয়টা জানে, তো সেই ট্রাঙ্কগুলো গেল কোথায়, রাখলাম কোথায়, কী হলো? সেই খোঁজটা তারা একটু দিক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে দেড়শ সুটকেস নিয়ে সৌদি আরব চলে গিয়েছিল এবং সেখানে লকার ভাড়া করে নাকি অনেক জিনিস রেখে এসেছিল শোনা যায়। তখন সেটা প্রচার হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মন্ত্রী বাবর (লুৎফুজ্জামান বাবর) যখন এখানে আসে, এয়ারপোর্টে ধরা পড়েছিল কয়েক লাখ ডলার নিয়ে। পরে অ্যাম্বাসি থেকে লোক গিয়ে কোনোমতে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়েছিল।’

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের এই সমস্ত বদ অভ্যাস তারা সবাইকে, মানে নিজে চোর, সবাইকে ওই রকমই মনে করে। এটা হলো তাদের চরিত্র। এই ধরনের কথা তারা ছড়ায়, মনে করে যে এটা বোধহয় খুব প্রচার করতে পারবে।

তিনি বলেন, সমালোচনাকারীরা একটা কথা ভুলে যায় যে আমি জাতির পিতার মেয়ে। আমরা দেশের জন্য কাজ করি, আর ক্ষমতাটা আমাদের কাছে দেশসেবা করা, মানুষের সেবা করা। আমরা অর্থ সম্পদের জন্য লালায়িত না।

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তাদের সন্তানরা ক্ষমতাটাকে ভোগের জায়গা বানিয়েছে। ক্ষমতাটাকে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার জায়গা বানিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে ক্ষমতা হচ্ছে মানুষের ভাগ্য গড়া, বাঙালির ভাগ্য গড়া, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়া। দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সূত্র: বাসস

এমন আরও সংবাদ

Back to top button