ভ্রমণ

ঘুরে আসুন এশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ ১২ দেশ থেকে

তালিকার তৃতীয় স্থানে আছে ফিলিপাইন। ছবি: সংগৃহীত

তালিকার তৃতীয় স্থানে আছে ফিলিপাইন। ছবি: সংগৃহীত

ভ্রমণের সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দারুণ রান্না অথবা ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিশেষভাবে মানুষের মনে দাগ কাটে। তবে পর্যটকদের বারবার কোনো দেশে ফিরিয়ে আনে সেই দেশের মানুষ। ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জরিপ চালায়। তাদের জরিপের ভিত্তিতে ‘ইন্টার ন্যাশনস’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। বিদেশে স্থানান্তরিত হওয়া মানুষ ও বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টিকোণ থেকে এই দেশগুলোকে তালিকাবদ্ধ করা হয়। ২০২৪ সালের জরিপের ভিত্তিতে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই দেশগুলো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের তালিকায় নাম লেখায়নি। এর মূলে আছে দেশগুলোর অধিবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত

তালিকায় জায়গা পাওয়া ৩০টি দেশের মধ্যে এশিয়ার আছে ১২টি দেশের নাম। তালিকার তৃতীয় স্থানে আছে ফিলিপাইন। সহানুভূতি ও আতিথেয়তা ফিলিপাইনের সংস্কৃতির মূল ভিত্তি। দেশটির মানুষ প্রায়ই অতিথিদের সাহায্য করতে অতিরিক্ত উদ্যোগও নিয়ে থাকেন। ফিলিপিনোরা পর্যটকদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে। তারা সহজেই কথা বলা শুরু করেন, হাসিমুখে স্বাগত জানান এবং পর্যটকদের যেন অচেনা না লাগে সে জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করেন। ইংরেজি ফিলিপাইনে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ভাষা। তাই ফিলিপিনোরা পর্যটকদের কিছু বোঝাতে বা কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এর পরেই তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে আছে ইন্দোনেশিয়া। এই দেশের মানুষেরা খুব সহজে কথা বলা শুরু করেন। রাস্তা হারিয়ে ফেললে বা কিছু খুঁজে না পেলে স্থানীয়রা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য করেন। তাঁদের উৎসবগুলোতে অনেক পর্যটককে অংশ নিতে দেখা যায়। বালি, লম্বক এবং জাকার্তার মতো পর্যটন এলাকায় প্রচুর মানুষ ইংরেজি বলতে পারেন। তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। দেশটির মানুষ খুবই বিনয়ী ও শান্ত স্বভাবের। পর্যটকদের পথ চিনিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে স্থানীয় বাজারগুলোতে দরদামের ন্যায্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করেন তারা। ভিয়েতনামের রেস্টুরেন্ট বা স্ট্রিট ফুড বিক্রেতারা পর্যটকদের নতুন খাবার চেখে দেখতে উৎসাহিত করেন। দেশটির নববর্ষ উৎসবে অনেক পর্যটককে স্থানীয় রীতিতে অংশ নিতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাদের অতিথি করে নেন, উপহার দেন, এমনকি ঘরোয়া ভোজেও নিমন্ত্রণ করেন। অনেক হোটেল মালিক বা হোস্টেল কর্মী পর্যটকদের স্থানীয় নিয়মকানুন বুঝিয়ে দেন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে। কোথায় গেলে ভালো হয় বা কোন এলাকা এড়িয়ে চলা উচিত এমন পরামর্শ দেন।

তালিকার এই তিনটি দেশই এখন ভ্রমণপ্রেমিদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা।

তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। ছবি: সংগৃহীততালিকায় পঞ্চম অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। ছবি: সংগৃহীত

ভ্রমণের সময় যদি কোনো ওমানি আপনাকে তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওমানি সংস্কৃতির গভীরে আছে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ। তাঁরা অতিথিদের পরিবারের সদস্যদের মতো আপ্যায়ন করার চেষ্টা করেন। আর তাই এই তালিকায় দেশটি আছে ষষ্ঠ অবস্থানে। ওমানে অতিথিকে স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য হলো খেজুর এবং কফি পরিবেশন করা। ওমানে সুলতান কাবুসগ্র্যান্ড মসজিদের মতো বড় মসজিদগুলো পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে। তালিকায় অষ্টম স্থানে আছে থাইল্যান্ড। দেশটিকে অনেক সময় বলা হয় ‘ল্যান্ড অব স্মাইলস’ বা হাসির দেশ। দেশটির মানুষজন অত্যন্ত হাসিখুশি, অতিথিপরায়ণ এবং পর্যটকদের প্রতি বন্ধুসুলভ। থাই নববর্ষে পানির উৎসবের মতো উৎসবে পর্যটকদের ঢল নামে মূলত হাসিখুশি থাইদের কারণেই।

তালিকায় ওমান আছে ষষ্ঠ অবস্থানে। ছবি: সংগৃহীততালিকায় ওমান আছে ষষ্ঠ অবস্থানে। ছবি: সংগৃহীত

তালিকায় এর পরেই চৌদ্দতম অবস্থানে আছে মালয়েশিয়া, পনেরোতম বাহরাইন, সতেরোতম তাইওয়ান, আঠারোতম সৌদি আরব, বিশতম ভারত, পঁচিশতম চীন এবং ছাব্বিশতম স্থানে আছে তুরস্ক।

বোঝাই দেশগুলো শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে দিয়ে এই তালিকায় জায়গা পায়নি। জায়গা পেয়েছে তাদের নাগরিকদের কারণে। তাদের আতিথেয়তা এই দেশগুলোকে পর্যটকদের জন্য আরামদায়ক ও আরও উপভোগ্য করে তুলছে দিনের পর দিন।

সূত্র: এম এস এন

এমন আরও সংবাদ

Back to top button