শারদীয় দুর্গাপূজায় এবার মণ্ডপের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে.জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এবার সারাদেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি যা গত বছরের চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি পূজামন্ডপে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। আগামী ২ অক্টোবর দশমী (প্রতিমা বিসর্জনের দিন) পর্যন্ত মোট নয়দিন সারাদেশে ২ লক্ষ ৩ হাজার ৫৬৪ জন আনসার সদস্য এ দায়িত্ব পালন করবে। তাছাড়া দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সারাদেশে প্রায় এক লাখ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য কাজ করছে এবং ৭০ হাজার পুলিশ ও ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, প্রতিটি পূজামন্ডপে মন্ডপ কমিটির সাতজন সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবে। উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের সহজে শনাক্তকরণের জন্য পুলিশ ও আনসার সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের এনটিএমসি’র অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূজামন্ডপের নিরাপত্তা বিধানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র ও জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল পরিচালনা করছে। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ মন্দির ও পূজামন্ডপের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে দুষ্কৃতকারী ও গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই এটি বরদাশত করা হবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধ করে জনসমক্ষে সঠিক ও স্পষ্ট বার্তা প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। আমি ইতোমধ্যে অনেকগুলো পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। এবার দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি।
সভায় দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে গতকাল সংঘটিত ঘটনা, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা বিশেষ করে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন।