বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে নিরাপত্তা-নজরদারি
নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অক্টোবরের শুরুতে খুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। পর্যায়ক্রমে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। সম্ভাব্য এসব সংকট মোকাবিলায় উপাচার্যদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বিশেষ নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো (শিক্ষার্থীদের পদচারণা বেশি হয়) সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনবে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টদের কড়া নজরদারি থাকবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও চলাচলের স্বাধীনতা যাতে বিঘ্ন না হয়, সেদিকেও নজর রাখবে কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে ইউজিসির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমাদের নিজেদেরও নানা ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেসব বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে।’
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ বছরের ২৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে যেকোনো সময় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে পারবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এদিকে, ইউজিসি থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু হওয়ার পর যেন কোনো ধরনের ‘অরাজক পরিস্থিতি’ তৈরি না হয়, সেজন্য এ চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় ওই চিঠিতে।
একইসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ধরনের জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কি-না, সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য ইউজিসিকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে ইউজিসির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে পাঠদান করা হবে এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায়, সে বিষয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল খোলার পর যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ক্যাম্পাসে গোয়েন্দা নজরদারি প্রয়োজন হতে পারে। আমরা চাই না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন করে কোনো ধরনের আন্দোলন ও সংকট সৃষ্টি হোক। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে গত সপ্তাহের শেষদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’