ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’র তাণ্ডবে ভারতে ৩ জন নিহত!
ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশার উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’। ঝড়ে নৌকা উল্টে দুই মৎস্যজীবীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে কয়েকজন।
রোববার রাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর উপকূল এবং ওড়িশার দক্ষিণ উপকূলের মাঝামাঝি জায়গায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়। যার জেরে বিশাখাপট্টনম, শ্রীকাকুলামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। নিচু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। ওড়িশার গঞ্জম জেলায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্য হয় একজনের। অন্যদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে মৃত্যু হয়েছে দুই মৎস্যজীবীর।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, শ্রীকাকুলামের একদল মৎস্যজীবী সমুদ্র থেকে ফেরার সময় মান্দাসা উপকূলে গুলাবের কবলে পড়েন। নৌকায় মোট ৬ জন ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ে মাঝসমুদ্রে উলটে যায় নৌকা। নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নিরাপদে উপকূলে পৌঁছাতে পারলেও বাকিরা পারেননি। পরে দুই মৎস্যজীবীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এখনো একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার ও মঙ্গলবার তেলঙ্গানায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তেলঙ্গানার মুখ্যসচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ১৬ হাজার মানুষকে ওড়িশার উপকূল এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থলভাগে ঝড় আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই শ্রীকাকুলামে শুরু হয় ঝড়ের দাপট। কলিঙ্গপত্তনমের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মোট ৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ১ হাজার ১০০ জন।
এর আগে চলতি বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আঘাত হানে ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গে। ইয়াসের তাণ্ডবে ওডিশায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপে পরিণত ‘গুলাব’, বাংলাদেশের ওপর থেকে প্রভাব কেটেছে : ভারতের উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ-দক্ষিণ ওডিশা উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’। বাংলাদেশের ওপর থেকেও ঝড়টির প্রভাব কেটে গেছে। সেজন্য দেশের সমুদ্রবন্দর থেকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ-দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কাছাকাছি দক্ষিণ উড়িষ্যায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ রোববার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলে তাণ্ডব চালায়। এতে নৌকা উল্টে দুজন মারা গেছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
এদিকে, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ এবং ওড়িশায় আঘাত করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’।
‘গুলাবের’ তাণ্ডবে শ্রীকাকুলামে নিখোঁজ ছয় জেলের মধ্যে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বাকিদের সন্ধান চলছে। ঝড়ের তাণ্ডবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই উল্টে যায় নৌকাটি বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।