বহুল আলোচিত রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় সাফাত আহমেদ সহ পাঁচ আসামির মামলায় ১২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছে আদালত।
জামিনে থাকা আসামিরা সবাই এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক আসামিদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- সাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিব ও নাঈম আশরাফ এবং সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন।
২২ আগস্ট একই আদালতে আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। মামলার চার্জশিটভুক্ত ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।
ওই ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর ৬ মে সন্ধ্যায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন এক ভুক্তভোগী।
এরপর ১০ মে রাতে সিলেট থেকে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে।
২০১৭ সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা এই মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
১৯ জুন ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত। এরপর ১৩ জুলাই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেয় আদালত।
আসামি সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারা এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৯ (১) এর ৩০ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযুক্ত পাঁচজন হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী। পাঁচ আসামির সবাই বর্তমানে জামিনে আছেন।
এই মামলায় আসামিদের ভেতর রহমত আলী বাদে বাকি সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই দুই শিক্ষার্থীকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেন সাফাত। তার গাড়িচালক ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের রেইন ট্রি হোটেলে নিয়ে যায়।
হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সেখানে যাওয়ার পর তারা কোনো ভদ্রলোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিল।
বাদী ও তার বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন।
পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এ সময় আসামিরা তাদের গাড়ির চাবি বাদীর বন্ধু শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন।
বাদীকে মারধর করা হয়। ধর্ষণ করার সময় সাফাতের গাড়িচালককে ভিডিও ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।
বনানীর রেইন ট্রি আবাসিক হোটেলে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
এরপর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় রহমত আলীকে পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তারা এতে ভয় পান। লোকলজ্জা এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।