দৃষ্টি আকর্ষণদেশজুড়েলিড নিউজ

ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখা চিংড়ি শিল্প

ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখা চিংড়ি শিল্পখুলনা : দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে চিংড়ি শিল্প। মোট উৎপাদিত চিংড়ির সিংহভাগই আসে খুলনা জেলা থেকে। করোনার কারণে গত বছর চিংড়ি রফতানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক ক্ষতির মুখে অনেকেই চিংড়ি চাষ বন্ধ রেখেছিলেন। এতে সংকটে পড়েন দেশের বড় বড় চিংড়ি রফতানিকারকরা। তবে করোনার প্রভাব কমায় আবারো আশায় বুক বেঁধেছেন এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষীরা। সম্ভাবনা দেখছেন রফতানিকারকরাও। তবে উৎপাদন ও জাহাজীকরণ ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এখনো উদ্বেগ কাটেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ি সনাতন, আধানিবিড়সহ নানা পদ্ধতিতে চাষ হয় গলদা ও বাগদা চিংড়ি। প্রতি বছর উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রায় ২ লাখ ৭৫ হেক্টর জমিতে চিংড়ি উৎপাদন হয়। মোট উৎপাদনে খুলনা জেলার হিস্যা সবচেয়ে বেশি।

একাধিক চিংড়ি রফতানিকারক জানান, চিংড়িঘেরে ভাইরাস ও করোনার ধাক্কায় উৎপাদন কমেছে। তাছাড়া গত কয়েক বছর বিদেশে চিংড়ির বাজার দখল করে আছে ‘ভেনামি’ নামের এক ধরনের হাইব্রিড চিংড়ি। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় এর ব্যাপক চাষ হয়। একরপ্রতি উৎপাদন ৮-১০ হাজার কেজি। ততটা সুস্বাদু না হলেও পর্যাপ্ত উৎপাদন ও সরবরাহের কারণে সহজেই এটি বাজার দখল করেছে।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, অব্যাহত বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকা ও বরফ সংকটের কারণে ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে। আবার চিংড়ির অভাবে কোম্পানিগুলো সামর্থ্যের ১৫-২০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারে না। ফলে বৈদ্যুতিক ব্যয়, ব্যাংকসুদ ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে রয়েছে কোম্পানিগুলো। আর এসবের বিরূপ প্রভাব পড়েছে রফতানিতে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার ধাক্কা শেষে আসন্ন বড়দিন সামনে রেখে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চিংড়ি রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে বড় আকারের মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশা করছেন খুলনা অঞ্চলের সাধারণ চিংড়িচাষী ও রফতানিকারকরা। রফতানি বন্ধ থাকায় গত বছর যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তা পুষিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছেন তারা। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় রয়েছে শঙ্কাও।

চিংড়িচাষীরা জানান, আধানিবিড় পদ্ধতিতে প্রতি একরে গড়ে ৮০ হাজার পোনা ছেড়ে সাড়ে চার মাস চাষ করে চার হাজার কেজি চিংড়ি উৎপাদন করতে সক্ষম হন চাষীরা। উৎপাদিত চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ফ্রিজিং করা হয়। পরে মোড়কজাত করে প্রস্তুত করা হয় রফতানির জন্য। তবে ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, সরকারি অনুদান না পাওয়াসহ নানা কারণে বাড়ছে চিংড়ির উৎপাদন খরচ। এতে উৎপাদনও কমছে বলে দাবি করেন তারা।

ট্রাস্ট সি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল হক লিটন বলেন, জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে জাহাজ ভাড়া। যে কারণে উৎপাদন খরচ ও চিংড়ি রফতানি ব্যয় বেড়েছে। এভাবে চললে রফতানিকারকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button