দেশজুড়েলিড নিউজ

প্রেমে সাড়া না দেয়ায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রেমে সাড়া না দেয়ায় স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করল বখাটেনিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুড়া গ্রামে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক বখাটে যুবক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। এর আগে একই দিন বিকেলে স্কুল থেকে ফেরার পথে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোরীর নাম মুক্তি বর্মণ। সে প্রেমনগর ছালিপুড়া গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মনের মেয়ে। মুক্তি প্রেমনগর ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়তো। আর ঘাতক বখাটের নাম কাওছার মিয়া। সে একই গ্রামের শামসু মিয়ার ছেলে।

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন কুমার সাহা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই কাওছার গা ঢাকা দিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মুক্তি বর্মণের কাকা লিটন চন্দ্র বর্মণ জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মুক্তিকে প্রায় সময় প্রেম নিবেদন এবং উত্যক্ত করতো কাওছার মিয়া। কিন্তু মুক্তি কখনও তাতে সাড়া দেয়নি। উপরন্তু মুক্তি বিষয়টি তার অভিভাবকদের জানায়। এরপর মুক্তির অভিভাবকরা কাওছারের অভিভাবকদের শরণাপন্ন হন। এর জেরে মঙ্গলবার বিকেল পৌণে তিনটার দিকে স্কুল থেকে ফেরার পথে মুক্তিকে দা দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে কাওছার। এ সময় মুক্তির সঙ্গে তার আরও কয়েক সহপাঠী ছিল। ঘটনার আকষ্মিকতায় তারা দৌড়ে দিগি্বদিক চলে যায়।

এরপর খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুক্তির কয়েকজন সহপাঠী জানায়, ‘আমরা একসঙ্গেই স্কুল থেকে ফিরছিলাম। স্কুল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছালিপুড়া গ্রামে পৌঁছার পর কাওছার এসে মুক্তিকে কোপাতে শুরু করে। আমাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মুক্তিকে উদ্ধার করেন।’

প্রেমনগর ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের আকন্দ বলেন, ‘মুক্তির পরিবার খুবই দরিদ্র। ছয় বোনের মধ্যে মুক্তি ছিল চতুর্থ। তার অপর দুই বোন নেত্রকোনা কলেজে পড়ে। আরেক বোন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। মুক্তি খুবই শান্ত এবং মেধাবী ছিল। ঘটনাটি খুবই নৃশংস এবং দুঃখজনক। আমরা বখাটে কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের বারহাট্টা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক সুরজিৎ ভৌমিক বলেন, ‘মুক্তি আমাদের স্থানীয় উয়ুথ গ্রুপের সদস্য ছিল। সে বাল্যবিয়ে এবং ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিল।’

মুক্তি হত্যার প্রতিবাদে আজ বুধবার সকাল ১১টায় বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘসহ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button