গণতন্ত্রের স্বার্থে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। সবকিছুই সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
বুধবার (৭ জুন) দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, জনগণের ক্ষমতায় চলতে হয় বলে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। জনগণের ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাই সংলাপের বিকল্প কিছু নেই। বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কথা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ‘নাকচ’ করে এলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বিষয়টি নিয়ে ‘সম্ভাবনার’ আভাস দিয়ে কথা বলেন মঙ্গলবার।
এক সমাবেশে তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনোভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে প্রস্তুত।
আমুর ওই কথার পরদিনই বুধবার (৭ জুন) সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত তাদের দল নেয়নি।
প্রয়োজনে আগের মতো জাতিসংঘের প্রতিনিধির ‘মধ্যস্থতায়’ সংলাপ হতে পারে বলে আমু যে বক্তব্য আগের দিন দিয়েছেন, তার ‘উল্টো’ কথা জানিয়ে কাদের বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতার দরকার হবেÑ এমন কোনো রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ পড়েনি। কিন্তু একই দিনে ‘সংলাপ’ নিয়ে ‘ইতিবাচক’ সুরে কথা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আওয়ামী লীগ একটি পপুলার পার্টি। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রয়েছে। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণের ক্ষমতায় চলতে হবে।
এদিকে বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি চেয়ে জামায়াতে ইসলামী যে আবেদন করেছে, সে বিষয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা রাজনীতি করেন রাজনৈতিক অধিকার, সভা-সমাবেশ করবে, তারা তাদের মতামত প্রদর্শন করবে, জানাবে এটাই তো স্বাভাবিক।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ গ্রেপ্তার সব নেতার মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করার অনুমতি চেয়ে এই আবেদন করেছে জামায়াত।
আগামী ১০ জুন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশ-পরবর্তী মিছিল করার অনুমতি চেয়ে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর দলের পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, জামায়াত ইসলামী এখনো নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃত দল নয়। তাদের আবেদনের বিষয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার সিদ্ধান্ত নেবেন। এখানে সমাবেশ করতে দিলে কোনো নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা রয়েছে কি না সেটি বিবেচনা করে কমিশনার সিদ্ধান্ত দেবেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতদের আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো ‘ষড়যন্ত্র বা পরিকল্পনা’ আছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারা যেটা বলেছে সেটাই যথেষ্ট। তারাই মনিটরিং করছেন। আমরা এটুকু মনে করি, রাষ্ট্রদূতরা যাতে তাদের শিষ্টাচার মেনে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনÑ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এর আগে গত ৪ জুন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল। ওই বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা-ই আমরা তুলে ধরেছি।