ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতি কারখানায় পরিণত করা হলে সরকার অ্যাকশনে যাবে বলে সতর্ক করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ রোববার তেজগাঁওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।
২০১৯ সালে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গত বুধবার রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালায়।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় বুয়েটে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকের প্রবেশের ঘটনার পর থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা শনিবার দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে।
তাঁরা ছয় শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছেন। রোববার বিক্ষোভ না করলেও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলছে। আর ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে চট্টগ্রামের নেতাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনা দেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সামনে উপজেলা নির্বাচন। নেত্রীর নির্দেশনা জানেন। আপনাদের প্রস্তাবনা ছিল, কোনো প্রার্থী না দেওয়ার। আপনাদের খুব দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। একেক জনের একেক রকম কথাবার্তা দলকে বিভ্রান্ত করে। যা খুশি বলে দিবেন? এটা তো আওয়ামী লীগ নয়, ফ্রি স্টাইলে কথা বললে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকলে নেত্রী যে উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে চান সেটা বাস্তবায়ন হবে। নিজের উপরে ছেড়ে দিলাম।’
কাদের বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা চায়ের দোকানে বসে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে। এই ধরনের নেতাদের পরিহার করতে হবে। উপজেলা নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার ভোট হবে, জনগণ যাকে ভোট দেওয়ার দিবে। এখানে আপনারা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।
তিনি বলেন, মঈন খানের মতো নেতারা আজকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলে। বিএনপির নেতাদের কেউ বলে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার, আবার কেউ বলে ভারতের পণ্য বর্জন। বিএনপির সব ইস্যু নির্বাচনে মার খেয়েছে। এখন তাদের নতুন ইস্যু ভারতবিরোধী।
বিএনপি মিথ্যাচার করছে করছে দাবি করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায় তখন বাংলাদেশের রির্জাভ ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার। এখন তারা আমাদের রির্জাভ নিয়ে কটাক্ষ করে। এখন আমাদের রির্জাভ ২১ বিলিয়ন ডলারের উপরে।’
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান,দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।