দেশজুড়েপরিবেশলিড নিউজ

চট্টগ্রামের ৩ উপজেলা প্লাবিত, পানিবন্দী লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের তিন উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব উপজেলার ২০ হাজার পরিবারের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের প্রয়োজন। অন্যদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানির কারণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের বসতঘর। এতে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের কারণে পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই ও ফটিকছড়িতে দুর্যোগ কবলিত। এতে মোট ২০ হাজার ১৭৫ পরিবারের প্রায় ৯৫ হাজার ৯০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ায় ৩ হাজার ১৭৫ পরিবার পানিবন্দী এবং প্রায় ১৫ হাজার ৯০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত। মীরসরাই উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নে ১২ হাজার পানিবন্দী পরিবারের প্রায় ৬০ হাজার জন ক্ষতিগ্রস্ত এবং সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৫ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার জন পানিবন্দী।

এদিকে নগরের বেশির ভাগ এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যাও কম দেখা যাচ্ছে। যার ফলে কর্মজীবী মানুষের চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে, অতিরিক্ত ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর অধিকাংশ এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, বাদুড়তলা, চকবাজার, বাকলিয়া, রাহাত্তারপুল, ডিসি রোড, আগ্রাবাদের সড়কে যানচলাচল একেবারে সীমিত, সড়কে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি। এসব এলাকার অনেক বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে গেছে।

টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে পানিবন্দী নগরবাসী। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর-বহদ্দারহাট সড়কের শুলকবহর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকাটানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে পানিবন্দী নগরবাসী। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর-বহদ্দারহাট সড়কের শুলকবহর এলাকায়।নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমাদের এলাকার অধিকাংশ বাসার নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষের কষ্ট হচ্ছে বেশি।’

চকবাজার এলাকার বাসিন্দা রাহুল দত্ত বলেন, ‘বাসাবাড়িতে পানি ওঠার যন্ত্রণা কেমন, সেটি নিজের বাসায় না উঠলে বোঝা যায় না। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’

টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে পানিবন্দী নগরবাসী। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর-বহদ্দারহাট সড়কের শুলকবহর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকাটানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে পানিবন্দী নগরবাসী। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর-বহদ্দারহাট সড়কের শুলকবহর এলাকায়। চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলায় গতকাল বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় মোট ৫০ মেট্রিকটন চাল, এর মধ্যে ফটিকছড়ি ২০, মীরসরাইয়ে ২০ ও সীতাকুণ্ডে ১০ মেট্রিকটন ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় ইতিমধ্যে ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ও গঠিত ১২৭টি মেডিকেল টিমের সব কটি চালু আছে।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button