বিপনণের মাধ্যমে মানসম্পন্ন কৃষি পণ্য সরবরাহে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রকল্প
দেশের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর হলেও রপ্তানি খাতের অবদান তুলনামূলকভাবে কম। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, উৎপাদক, বিক্রেতা ও ভোক্তার মধ্যে কার্যকরী সংযোগ স্থাপন না থাকা। এছাড়াও কৃষক, কৃষি উদ্যোক্তা ও কৃষি ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের গ্রেডিং, শ্রেণিকরণ, প্যাকেজিং, বিপণন ও সংরক্ষণে যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ ও দক্ষ উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারছে না।
বাংলাদেশ পরিসংখান ব্যুরোর তথ্যানুসারে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল ১১ দশমিক ০২ শতাংশ। দেশের মোট জনশক্তির ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত। কিন্ত যথাযথ অবকাঠামোর অভাব ও প্রযুক্তির ব্যবহারে অযোগ্যতা, উন্নত বীজ, কাঁচামাল ও যুগোপযোগী নীতি সহায়তার অভাবের কারণে এই খাতটি অনেক পিছিয়ে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যানুসারে প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৪তম। শীর্ষে রয়েছে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণনের মাধ্যমে কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে ভোক্তাদের নিকট মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই প্রকল্পের আওতায় জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস কাম ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের মাধ্যমে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কৃষিপণ্য সংরক্ষণের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কৃষক, ব্যবসায়ী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও উদ্যোক্তাদের কৃষিপণ্য বিপণনে সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে।
প্রকল্পটি ৩৫টি জেলার ৬৬ টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তন্মধ্যে ২১ টি জেলায় ২১টি অফিসসহ ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের কাজ চলমান আছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জোরদারকরণ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক তৌহিদ মো: রাশেদ খান বলেন কৃষি বিপনন অধিদপ্তর জোরদারকরণ প্রকল্প এর মেয়াদ ৩০ জুন ২০২৫ সালে শেষ হবে। প্রকল্পের মেয়াদ আরো ২ বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হবে এবং আরো বলেন প্রকল্পের আওতায় ২১টি জেলায় ২১টি অফিস কাম ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক মোঃ মাসুদ করিম বলেন প্রকল্পের মাধ্যমে বিপণনের বিভিন্ন স্তরে সহায়তা প্রদান করে কৃষক, ব্যবসায়ী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও উদ্যোক্তাগণের পণ্যের একটি সুন্দর ও সুসংগঠিত বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য পাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত হবে।
প্যাকেজিং বিষয়ে সচেতন হওয়ার কারণে কৃষকদের বিপণন দক্ষতার উন্নয়ন ও আয় বৃদ্ধি পাবে। যার কারণে কৃষকদের জীবনযাত্রার মান ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।