রংবেরঙ

পোল্যান্ডে সাড়ে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন দুই ‘পিরামিড’ উন্মোচিত

পোল্যান্ডে সাড়ে ৫ হাজার বছরের প্রাচীন দুই ‘পিরামিড’ উন্মোচিত

পোল্যান্ডে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ৫,৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো দুইটি বিশাল প্রাগৈতিহাসিক কাঠামো উন্মোচন করেছেন, যেগুলোকে ‘পোলিশ পিরামিড’ বলা হচ্ছে। ভিয়েলকোপোলস্কা অঞ্চলের উইসকক গ্রামের জেনারেল ডেজিডারি চালাপোভস্কি ল্যান্ডস্কেপ পার্কে এই নেউলিথিক সমাধি আবিষ্কৃত হয়। ভিয়েলকোপোলস্কা ভয়েভোডশিপের ল্যান্ডস্কেপ পার্ক কমপ্লেক্স তাদের ফেসবুকে এই আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়।

অ্যাডাম মিসকিয়েভিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানান, এই মেগালিথিক সমাধিগুলো খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের, অর্থাৎ ৫,৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো। এটি স্টোনহেঞ্জের সমসাময়িক এবং মিশরের পিরামিডেরও আগের সময়ের।

রোববার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানান, ১০ টন পর্যন্ত ওজনের বড় পাথর ব্যবহার করে সমাধি নির্মাণ করা হয়, যা সরঞ্জাম এবং শ্রমের সহায়তায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। প্রায় ২০০ মিটার লম্বা এবং ৪ মিটার উঁচু এই কাঠামোগুলি লম্বাটে ট্রাপেজিয়াম আকারের।

এই সমাধিগুলো দিকনির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে, যা তৎকালীন মানুষের জ্যোতির্বিজ্ঞানের জ্ঞানের ইঙ্গিত দেয়।

সম্ভাব্যত, প্রতিটি সমাধিতে একজন করে কঙ্কাল পিঠের উপর শায়িত অবস্থায়, পা পূর্ব দিকে রাখা থাকত, এবং পাশে মাটির পাত্র, পাথরের কুঠার ও আফিমের পাত্রসহ নানা সমাধি সামগ্রী রাখা হতো।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানান, এগুলো ফানেলবিকার সংস্কৃতির মানুষের তৈরি, যারা নেউলিথিক যুগে কৃষিকাজ এবং বিশাল সমাধি স্থাপনার জন্য পরিচিত ছিল।

ভিয়েলকোপোলস্কা অঞ্চলের ল্যান্ডস্কেপ পার্ক অ্যাসোসিয়েশনের আর্তুর গোলিস বলেন, ‘যদিও ফানেলবিকার সংস্কৃতির সমাজ ছিল তুলনামূলকভাবে সমতাভিত্তিক, তবুও এই সমাধিগুলোতে ওই সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শায়িত থাকতেন—নেতা, পুরোহিত, শামান।’

তিনি পোল্যান্ডের সংবাদ সংস্থা পিএপিকে জানান, ‘প্রতিটি প্রজন্ম তাদের নিজস্ব মেগালিথ তৈরি করত।’

এই আবিষ্কার নেউলিথিক ইউরোপের সামাজিক, ধর্মীয় ও স্থাপত্যগত উৎকর্ষ সম্পর্কে নতুন ধারণা দিচ্ছে এবং প্রাচীন ইউরোপীয় সভ্যতা সম্পর্কিত আমাদের বিদ্যমান ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে।

গোলিস আরও জানান, ‘সম্ভাব্যত, এখানে পাথরের কুঠার, হাতুড়ি, মাটির পাত্র এবং আফিম সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ পাত্রও পাওয়া যেতে পারে।’

সময়ের সাথে সাথে অনেক সমাধিই বিলীন হয়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে যেগুলো বনাঞ্চলে ছিল সেগুলো টিকে আছে এবং আধুনিক যুগে আবিষ্কৃত হচ্ছে।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button