ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় ঝুমন দাস ফের গ্রেপ্তার
ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ
এক্সক্লুসিভ নিউজ, সুনামগঞ্জ : ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের ঝুমন দাসকে ফের ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাতে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন একটি মামলা করা হয়।
এর আগে দুপুরের দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা যায়, ঝুমন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মসজিদ-মন্দির নিয়ে একটি পোস্ট’কে ঘিরে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাও গ্রামে। গত ২৮ আগস্ট ফেসবুকে স্ট্যাটাস শেয়ার করেন ঝুমন। তারপর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুমন মিয়া। তিনি জানান, ২৮ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে শাল্লার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুমন দাস প্রকাশ আপন (২৬) তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট করেন। ওই পোস্টের পর এলাকায় মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঝুমন দাসকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, পোস্টটি তিনি করেছেন বলে স্বীকার করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শাল্লার নোয়াগাওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। দিরাই ও শাল্লা দুটি থানার পুলিশ সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গ্রামে টহল দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতের ‘শানে রিসালাত’ সমাবেশে তৎকালীন আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। পরের দিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক’ স্ট্যাটাস দেন ঝুমন দাস।
এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে হেফাজত ইসলামের স্থানীয় সমর্থকরা ১৭ মার্চ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাওয়ের শতাধিক হিন্দু বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। যা সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। উস্কানিমূলক স্ট্যাটাসের দায়ে ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পাশাপাশি নোয়াগাওয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়।
ঝুমন দাসসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাছাড়া পুলিশ ও এলাকাবাসী বাদী হয়ে হেফাজত অনুসারী দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা করে। প্রায় ছয় মাস কারাবাসের পর গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ঝুমন।