কখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পার্সোনাল কাউন্সিলর, কখনো অডিট চিফ অফিসার আবার কখনো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের পিএস হিসেবে পরিচয় দিতো প্রতারক। এসব ভুয়া পরিচয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের একটি টিম।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোঃ জহিরুল ইসলাম বাপ্পি। এসময় তার হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও ৫টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সাইবারের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মোঃ নাজমুল হক পিপিএম ডিএমপি নিউজকে বলেন, প্রতারক জহিরুল অনলাইনে বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখে ভাড়া নেওয়ার জন্য মামলার বাদীকে ফোন করে একটি বাসা দেখতে যায়। বাসা দেখে পছন্দ হওয়ায় প্রতারক বাসাটি ভাড়া নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। এসময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও একটি ভিজিটিং কার্ড প্রদান করে জহিরুল নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালযয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের পিএস পরিচয় দিয়েছে। কিছুদিন পর মামলার বাদীকে ফোন করে জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক লোক নিয়োগ করা হবে। মামলার বাদীকে সেখানে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে সিভি নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, পরে প্রতারক জহিরুল চাকরি দেওয়ার জন্য মামলার বাদীর কাছ থেকে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কিছু টাকা নেয়। এরপর থেকে প্রতারকের মোবাইল নম্বর বন্ধ পান ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে মোঃ জহিরুল ইসলাম বাপ্পি নামে কোন পিএস নেই। বাদী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, দক্ষিণখান থানায় রুজুকৃত মামলার তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত রবিবার (২৬ মার্চ ২০২৩ খ্রি.) বাগেরহাট জেলার সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জহিরুলকে গ্রেফতার করা হয়। পল্লবী থানার অপর একটি মামলায় দেখা যায়, এই প্রতারক নিজেকে অডিট চিফ অফিসার (মিনিস্ট্রি অব হেলথ ডিপার্টমেন্ট) পরিচয় দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের ফুড স্টোর কিপার এবং অডিট অফিসার পদে চাকরি দেয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ডিবি-সাইবার ও স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ পিপিএম-এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান বিপিএম এর তত্ত্বাধানে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক পিপিএম-এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল হক বলেন, পরিচয় যাচাই না করে কারো সাথে লেনদেন করা উচিৎ নয়। প্রতারণা এড়াতে মিষ্টি কথার প্রলোভনে না পড়া, ভিজিটিং কার্ড বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখেই আশ্বস্ত না হওয়া, কারো পরিচয় সম্পর্কে সন্দেহ হলে নিকটস্থ থানা পুলিশকে অবহিত করার অনুরোধ করেন তিনি।