জাতীয়লিড নিউজ

ব্যবসায়ীদের আর্তনাদে ভারী নিউ মার্কেট এলাকা

ব্যবসায়ীদের আহাজারি আর আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে রাজধানীর নিউ মার্কেটের আকাশ-বাতাস। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৮টি ইউনিট। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মার্কেটের ভেতরে ঢুকে মালামাল বের করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন ও পয়লা বৈশাখ থাকায় ভালো ব্যবসা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা ছিল সকল দোকান। শেষরাতের দিকে দোকান বন্ধ করে অধিকাংশ ব্যবসায়ী বাসায় ফিরে গেছেন। আর ভোরবেলা পেয়েছেন আগুনের সংবাদ। রাত করে কেউ আর বাসায় টাকা নিয়ে যাননি। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর ক্যাশে বেশ ভালো টাকা রয়ে গিয়েছিল।

সজিব মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ছয় মাস আগে দেশের জমি বিক্রি করে দোকানটি নিয়েছি। এখন আমি পথে বসে গেলাম। গতকাল নতুন করে ২ লাখ টাকার মাল উঠিয়েছি। আগুন লাগার পর আজকে একটা মালও বের করতে পারি নাই। আমার কিছু নাই, সব শেষ হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, গতকাল শুক্রবার ছিল, কাস্টমারও অনেক বেশি ছিল। রাত তিনটা পর্যন্ত আমরা কাজ করেছি, দোকান পরিষ্কার করেছি। কাস্টমার ছিল না, তখন কেউ ছিল না। এ অবস্থায় দোকানে কেমনে আগুন লাগল?

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনা ও যুদ্ধের কারণে গত কয়েক বছরে ব্যবসা না হলেও এবছর ঈদে সে ক্ষতি পুষানোর সুযোগ পেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসাও বেশ ভালোই হচ্ছিল। প্রায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীর ক্যাশে লাখ লাখ টাকা রয়েছে। এবং অনেক টাকার মালামাল রয়েছে।

কাঁদতে কাঁদতে এক ব্যবসায়ী বলেন, ভাই রাত ৩ টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়েছি। আর সকাল ৬ টায় পেলাম আগুনের সংবাদ। আমার ক্যাশে অনেক টাকা ছিল। ভাই আমি শেষ। আমার আর কোন সম্বল বেঁচে নেই।

আরেক ব্যবসায়ী বলছেন, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পরিবার নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পরিবার কেমনে চালাব? আর পাওানাদারের টাকাই কীভাবে দিব?

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দ:) ভবনে আগুন জ্বলছে। প্রচণ্ড ধোয়া তৈরি করেছে। এর মধ্যেও মালামাল বের করার জন্য মার্কেটের ভেতরে ঢুকছেন ব্যবসায়ীরা।

ইমন নামে এক দোকানি জানান, মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় তাদের আন্ডার গার্মেন্টসের দোকান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনিসহ দোকানের কর্মচারীরা মালামাল বের করে নিয়ে আসতেছেন। এখনও সব মালামাল নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ইমন বলেন, ভিতর অনেক আগুন, মার্কেটের অধিকাংশ দোকান পুড়ে যাবে। নিচতলায় এবং প্রথম ও দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির কাছাকাছি থাকা দোকানগুলোর মালামাল শুধু বের করা সুযোগ পাইছি। বাকি দোকানের মালামাল বের করার সুযোগ হচ্ছে না।

লিটন নামে আরেকজন দোকানদার জানান, ব্যবসায়ীদের উপরে খড়ক নেমেছে। আমরা কি করবো? কোথায় যাবো? কিভাবে ব্যবসা করবো? কিভাবে পেট চলবে আমাদের? আগুনে তো সব শেষ।

এমন আরও সংবাদ

Back to top button